তিতলি আসতে আসতে মায়ের হাত টা সরিয়ে পা টিপে টিপে এসে দরজার কোণে বালতিটা উপুর করে রাখলো ……….. তারপর ওটার ওপর উঠে দু’পা উঁচু করে সদর দরজার ছিটকিনিটা খুলেই দে ছুট….. আজ আসবে বলেছে লাল তিতির …… খুব দেরি হয়ে গেলো … “তিতির কি অপেক্ষা করছে ওর জন্য ! নাকি ফিরে চলেই গেলো !
চলে যাবে !” বুক টা মোচর দিয়ে উঠলো তিতলি র ….সত্যি যদি লাল তিতির চলেযায় !! তিতির নাম টা তিতলি ই দিয়েছে ওকে ….তিতলি র ভালো লাগে ওকে এইনাম এ ডাকতে …. এটা একান্তই ওর দেওয়া নাম ….ওর সব চেয়ে কাছের বন্ধুকে…
কেউ বিশ্বাস ই করতে চায়না লাল তিতির ওর সাথে কথা বলে …লাল তিতির আর তিতলি খুব ভালো বন্ধু ….. মা তো রোজ বকে ওকে , তিতলি কেন যে মা কে বোঝাতেই পারে না …!! রোজ নাকি ঘুমোতেই হবে …. বোঝে না লাল তিতির ওরজন্যই শুধু অপেক্ষা করে বসে থাকে বাগানের শেষ প্রান্তে …. পা চালিয়ে ছোটে তিতলি…..বাগানের ঘাসে পা রাখতেই রঙ্গন ফুলের গাছ টা তে তিতলি দেখতে পেল লালতিতির কে … ফুলের সাথে মিশে লুকিয়ে ছিলো ….. তিতলি কাছে যেতেই লালতিতির উড়ে এসে বসলো ওর হাতের আঙুলে ….. রোজের মতো তিতলি হাত টা আসতে আসতে চোখের সামনে নিয়ে আসলো … আর বললো …. “ভালো আছো লাল তিতির ? “তিতির ও রোজের মতো ফরফর করে উড়ে একবার ওকে চক্কর কেটেআবার এসে বসলো আঙুলে …..এই ভাবেই এককথা দুকথা …….জমে ওঠে ৮ বছরের তিতলি র সাথে লাল ফড়িং এর বন্ধুত্ব …..আর ছেলেবেলার গান ……সাঁঝ ঘনিয়ে আসে…..
“তিতলি …. সোনা মা আমার …. ওঠো ওঠো ….. সন্ধ্যা লেগে গেছে …. চলো পড়তে বসতে হবে …. আজ অনেক হোমওয়ার্ক আছে … আর গানের রেওয়াজ টাও আজ করতে হবে …. আঁকার দিদির হোমওয়ার্ক ফিনিশ করেছ তো !
এই উইক এ আঁকার পরীক্ষা আছে কিন্তু ….চলো চলো …. উঠে পড় ….”মায়ের একনাগারে কথাগুলো যেন রেলগাড়ির মত ঝমাঝম করে এলো আবার মিলিয়ে গেল ……সঙ্গে নিয়ে গেলো লাল তিতির কেও …..
তিতলি র চোখে ঘুম….আর লাল তিতিরের স্বপ্ন … হাতে পেনসিল আর হারানো শৈশবে বেড়ে ওঠা কঠোর বাস্তব …..
মন ভরে গেল…… নতুন নতুন স্বপ্নে সাজুক তোর লেখা
খুব ভালো লাগল সুর্পনা, আপনার লেখা যেন এক পশলা বৃষ্টি হয়ে আমার বিছানা টা ভিজিয়ে দিল হারিয়ে যাওয়া বকুলের গন্ধে, ভাল থাকুন আরো এরকম লেখা উপহার দিন আমাদের
আসলে এইভাবেই বেঁচে থাকুক শৈশবেরা, তোমার লেখায়…